১৪ জুন, শনিবার — শরীয়তপুর জেলার জাজিরা উপজেলার পালেরচর ইউনিয়নের কাথুরিয়া গ্রামে ঘটে যায় এক বেদনাদায়ক ও ভয়ানক ঘটনা। মালয়েশিয়া প্রবাসী সোহেল দেওয়ানের স্ত্রী এমিলি আক্তার অভিযোগ করেন, একই এলাকার মতি খাঁ (৩৮) তাকে যৌন নিপীড়ন ও শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে।
এই ভয়ঙ্কর ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে ১৩ জুন বিকেলে স্থানীয়ভাবে শালিস বৈঠকের আয়োজন করা হয়। কিন্তু শালিসেই উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের একপর্যায়ে এমিলির ভাসুর লালন দেওয়ান, ক্ষুব্ধ হয়ে অভিযুক্ত মতি খাঁকে ঘুষি ও কাঁচি দিয়ে আঘাত করেন। শালিস ভেঙে পড়ে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়।
সন্ধ্যার পর মতি খাঁর নেতৃত্বে মোটরসাইকেলযোগে ১০–১২ জনের একদল হামলাকারী চড়াও হয় গিয়াসউদ্দিন দেওয়ানের বাড়িতে। তারা লালন ও মিলন দেওয়ানকে রামদা ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত করে।
আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় প্রথমে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, লালনের অবস্থা সংকটজনক।
পরে সাংবাদিকরা অভিযুক্ত মতি খাঁর বাড়িতে গেলে দেখা যায়, বাড়ি তালাবদ্ধ। ফোনে তার ভাই লতিফ খাঁ জমি সংক্রান্ত বিরোধের কথা স্বীকার করলেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগ অস্বীকার করেন।
পালেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফরাজি বলেন,
“আমি ঘটনাটি শুনেছি এবং প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতা পেয়েছি। দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।”
জাজিরা থানার ওসি মাইনুল ইসলাম জানান,
“অভিযোগ পেয়েছি, মামলা প্রক্রিয়াধীন। আসামিদের ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।”
মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন,
“এ ধরনের ঘটনা নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তার জন্য হুমকি। নিপীড়নের শিকার হওয়ার পাশাপাশি তারা হামলার শিকারও হচ্ছেন — এটি ন্যায়বিচারের প্রতি বড় চ্যালেঞ্জ।”
চ্যানেল আর এ নিউজ /ওবায়েদুর রহমান সাইদ /শরীয়তপুর