শনিবার (২৯ মার্চ) ছাত্রদল নেতা আশরাফুজ্জামান জিকু’র সাথে ভোমরা এলাকার একদল মহিলার বাকবিতন্ডতা ও হাতাহাতির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পায়।
Mrinal Mondal নামের একটি আইডি থেকে ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট দেয়া হলে মুহুর্তেই ভাইরাল হয়। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সংগৃহীত ছাত্রদল নেতার লাঞ্ছিতের ভিডিওটি সাতক্ষীরার কাগজসহ একাধিক সংবাদ মাধ্যমের ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হয়।
রোববার (৩০ মার্চ) ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটির বিষয়ে সাতক্ষীরার কাগজে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন ছাত্রদল নেতা আশরাফুজ্জামান জিকু।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ভোমরা স্থলবন্দরে জনৈক শফিউল্লাহর সাথে আমদানি-রপ্তানি ব্যবসায় যুক্ত ছিলেন ছাত্রদল নেতা আশরাফুজ্জামান জিকু ও তার চাচতো ভাই। শফিউল্লাহ ব্যবসায়িক কারনে কয়েক মাস আগে আশরাফুজ্জামান জিকু’র কাছ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নিয়েছিলেন। তাছাড়া তার চাচতো ভাইয়েরও শফিউল্লাহর কাছে ৫ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে।
আশরাফুজ্জামান জিকু বলেন, দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও পাওনা টাকা না দিয়ে শফিউল্লাহ তালবাহানা করে আসছিল। একাধিকবার তার বাড়িতে টাকা আদায়ের জন্য গেলেও তারা টাকা পরিশোধ না করে উল্টো তাদেরকে তাচ্ছিল্য করে বাড়ি থেকে বের করে দিয়েছিল। বিষয়টি ভোমরা ইউনিয়নের জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও অন্যান্য সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মী এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও অবগত ছিলেন।
সর্বশেষ সোমবার (২৪ মার্চ) আবারও পাওনা টাকার জন্য এক ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে শফিউল্লাহর বাড়িতে গিয়েছিলেন ছাত্রদল নেতা জিকু। সেখানে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে পাওনা টাকা পরিশোধের জন্য শফিউল্লাহর গোয়ালঘর থেকে একটি গরু বের করে আনতে উদ্যত হয়েছিলেন তারা। সেসময় শফিউল্লাহর স্ত্রী জেসমিন নাহারসহ আশপাশের মহিলারা তাদেরকে ঘিরে ধরে এবং শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত করেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে।
এদিকে লাঞ্ছিতের ঘটনাটি নিয়ে সম্প্রতি সাতক্ষীরা সদর থানায় শালিস বৈঠক হয়েছে। সেখানে সদর থানা পুলিশের উপস্থিতিতে ওই দিন ছাত্রদল নেতা আশরাফুজ্জামান জিকু’কে লাঞ্ছিতের ঘটনাটিকে ’ভুল বোঝাবুঝি’ উল্লেখ করে অনাকাঙ্খিত ঘটনার জন্য লিখিত মুচলেকায় ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন শফিউল্লাহর স্ত্রী জেসমিন নাহার।
সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের সম্মুখে শফিউল্লাহর স্ত্রী জেসমিন নাহারের দেয়া লিখিত মুচলেকার কপি জেলা ছাত্রদলের মাধ্যমে পৌঁছেছে সাতক্ষীরার কাগজের হাতে।
ছাত্রদল নেতা আশরাফুজ্জামান জিকু আরও বলেন, শফিউল্লাহর কাছে আমার নিজের এবং আমার চাচতো ভাইয়ের পাওনা বকেয়া টাকার বিপরীতে শফিউল্লাহর ব্যাংকের চেক, তার স্ত্রীর দেয়া মুচলেকাসহ যাবতীয় প্রমাণাদি রয়েছে। তবে আইনের মাধ্যমে পাওনা টাকা আদায় না করে গরু নিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াটি ভুল ছিল। কিন্তু পুরো ঘটনাটি সেখানে সৃষ্ট পরিস্থিতির কারনে ঘটেছে।
গরু নিয়ে টানাহেঁচড়া ও লাঞ্ছিতের ভিডিওটি সত্য হলেও, ঘটনার পিছনে চাঁদাবাজি নয় বরং ব্যবসায়িক লেনদেন ছিল বলে বক্তব্যে দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদল নেতা আশরাফুজ্জামান জিকু।
যদিও চাঁদার টাকার জন্য ছাত্রদল নেতা আশরাফুজ্জামান জিকু’র নেতৃত্বে গোয়াল ঘর থেকে গরু ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছিল বলে ব্যবসায়ী শফিউল্লাহর পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।
চ্যানেল আর এ নিউজ / সাতক্ষীরা / আবু জাফর